মায়ান সভ্যতার ইতিহাস

প্রকাশঃ মে ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৫:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:১৯ পূর্বাহ্ণ

ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম:

sculpture-maya-warrior-প্রথম মানবসমাজের উদ্ভব হয়েছিল আফ্রিকা মহাদেশে, প্রায় ২ লক্ষ বছর আগে। তার মানে আফ্রিকাকে আমরা আমাদের আদি নিবাস বলতে পারি। এরও প্রায় ৭০ হাজার বছর পরে, আজ থেকে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগে তারা ছড়িয়ে পড়তে লাগলো আফ্রিকার বাইরে পৃথিবীর অন্যান্য জায়গাগুলোতে।

প্রায় ৯০ হাজার বছর আগে তারা ইউরোপে আর মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছায়। তবে সবচেয়ে মজার কথা হচ্ছে, যে আমেরিকা শিক্ষায় প্রযুক্তিতে সবার চেয়ে এগিয়ে, সেখানেই মানুষ পৌঁছায় সবার শেষে আজ থেকে মাত্র ১৫ হাজার বছর আগে!

এই মায়া সভ্যতার লোকদের কথা শুনলে ভেবেই পাওয়া যায় না যে, সেই চার হাজার বছর আগে কীভাবে তারা এত উন্নত হয়েছিল? যখন পৃথিবীর মানুষরা বাড়িঘরই ঠিকঠাক বানাতে শেখেনি, কেবল আগুন জ্বালিয়ে খাবার সেদ্ধ করা শিখেছিল, সেই সময় তারা কিভাবে পাথর দিয়ে তৈরি করেছিল বিশাল বিশাল সব ঘরবাড়ি। তা আজকের দিনের প্রায় বিশ পঁচিশ তলা বিল্ডিংয়ের সমান তো হবেই!

যখন কেউ লিখতে পড়তে তো দূরে থাক, অধিকাংশ জাতির ভাষাই পুরোপুরি গড়ে ওঠেনি, তখন তারা তাদের ভাষায় এমনকি একরকম ক্যালেন্ডারও বানিয়ে ফেলেছিল। চাঁদ, তারা, গ্রহ নক্ষত্র নিয়েও তারা পড়াশুনা করত, যাকে বলে কিনা জ্যোতির্বিদ্যা। শুধু তাই নয়, ওরা গান গাইত, কবিতা লিখত; রীতিমত সাহিত্য চর্চা করতো! পুরো আমেরিকা মহাদেশজুড়ে মায়া সভ্যতাই একমাত্র প্রাচীন সভ্যতা, যাদের নিজস্ব লেখা ভাষা ছিল, যারা সুন্দর করে পড়তে এবং লিখতে জানতো।

কিন্তু কীভাবে জন্ম হলো মায়া সভ্যতার? কীভাবেই বা এই সভ্যতা সেই আদিম যুগেও এতো বিকশিত হল, বা উন্নত হলো?

Mayacivilization-1মায়া সভ্যতার মানুষজন প্রথম কবে এই এলাকায় এসেছিল তা জানা যায়নি। তবে খ্রিষ্টের জন্মেরও প্রায় ২০০০ বছর আগের মায়ান ভাষায় লেখ্য রূপ পাওয়া গেছে। এই সময়ের আগে মায়ানরা ছিল যাযাবর। তারা খাদ্য, পানি এবং আশ্রয়ের জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেত। ওই অঞ্চলে মায়ানরাই প্রথম বাড়িঘর তৈরি করে। খ্রিষ্টপূর্ব ১৮০০ সাল থেকে তারা ওই অঞ্চলে পশুপালন শুরু করে, আর বানাতে শুরু করে মাটি দিয়ে নানারকম তৈজসপত্র, যেমন থালা, বাটি, হাঁড়ি প্রভৃতি। ফলে তারা পশু থেকে মাংস আর মাটি থেকে তৈরি তৈজসপত্র পেতে লাগলো। ফলে তাদের খাবার আর খাবার রাখার পাত্রের কোন অভাব রইলো না।

তারা মৃতদেহের সৎকার করা শিখলো, মৃতদেহের ওপর সমাধিও নির্মাণ করতে শুরু করলো। এভাবেই মায়ানরা ধারণা পেয়ে গেল পিরামিড ও মমি নির্মাণের। মিসরের সুউচ্চ পিরামিড এবং মমির মতো বিশাল না হলেও সেই ছাঁচের মমি ও পিরামিড তৈরি করতো তারা। মায়া সভ্যতা বিখ্যাত হয়ে আছে ওদের স্থাপত্যশিল্পের জন্য। ওদের তৈরি বিশাল বিশাল ঘরবাড়ি, ওদের তৈরি পিরামিড আর মূর্তিগুলোর জন্য।

মায়ানরা এখনো পৃথিবীর বুক থেকে হারিয়ে যায়নি। ওদের পূর্বপুরুষদের স্থাপনাগুলো যেমন সগৌরবে পৃথিবীর বুকে এখনো বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, তেমনি আজও মধ্য আমেরিকায় প্রায় ৬০ লক্ষ মায়ান বাস করছে নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য বজায় রেখে।

প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G